মাস্টারি-শাসনদুর্গে সিঁধকাটা ছেলে ক্লাসের কর্তব্য ফেলে জানি না কী টানে ছুটিতাম অন্দরের উপেক্ষিত নির্জন বাগানে। পুরোনো আমড়াগাছ হেলে আছে পাঁচিলের কাছে, দীর্ঘ আয়ু বহন করিছে তার পুঞ্জিত নিঃশব্দ স্মৃতি বসন্তবর্ষার। লোভ করি নাই তার ফলে, শুধু তার তলে সে সঙ্গরহস্য আমি করিতাম লাভ যার আবির্ভাব অলক্ষ্যে ব্যাপিয়া আছে সর্ব জলে স্থলে। পিঠ রাখি কুঞ্চিত বল্কলে যে পরশ লভিতাম জানি না তাহার কোনো নাম; হয়তো সে আদিম প্রাণের আতিথ্যদানের নিঃশব্দ আহ্বান, যে প্রথম প্রাণ একই বেগ জাগাইছে গোপন সঞ্চারে রসরক্তধারে মানবশিরায় আর তরুর তন্তুতে, একই স্পন্দনের ছন্দ উভয়ের অণুতে অণুতে। সেই মৌনী বনস্পতি সুবৃহৎ আলস্যের ছদ্মবেশে অলক্ষিতগতি সূক্ষ্ণ সম্বন্ধের জাল প্রসারিছে নিত্যই আকাশে, মাটিতে বাতাসে, লক্ষ লক্ষ পল্লবের পাত্র লয়ে তেজের ভোজের পানালয়ে। বিনা কাজে আমিও তেমনি বসে থাকি ছায়ায় একাকী, আলস্যের উৎস হতে চৈতন্যের বিবিধ দিগ্বাহী স্রোতে আমার সম্বন্ধ চরাচরে বিস্তারিছে অগোচরে কল্পনার সূত্রে বোনা জালে দূর দেশে দূর কালে। প্রাণে মিলাইতে প্রাণ সে বয়সে নাহি ছিল ব্যবধান; নিরুদ্ধ করে নি পথ ভাবনার স্তূপ; গাছের স্বরূপ সহজে অন্তর মোর করিত পরশ। অনাদৃত সে বাগান চায় নাই যশ উদ্যানের পদবীতে। তারে চিনাইতে মালীর নিপুণতার প্রয়োজন কিছু ছিল নাকো। যেন কী আদিম সাঁকো ছিল মোর মনে বিশ্বের অদৃশ্য পথে যাওয়ার আসার প্রয়োজনে। কুলগাছ দক্ষিণে কুয়োর ধারে, পুবদিকে নারিকেল সারে সারে, বাকি সব জঙ্গল আগাছা। একটা লাউয়ের মাচা কবে যত্নে ছিল কারো, ভাঙা চিহ্ন রেখে গেছে পাছে। বিশীর্ণ গোলকচাঁপা-গাছে পাতাশূন্য ডাল অভুগ্নের ক্লিষ্ট ইশারার মতো। বাঁধানো চাতাল; ফাটাফুটো মেঝে তার, তারি থেকে গরিব লতাটি যেত চোখে-না-পড়ার ফুলে ঢেকে। পাঁচিল ছ্যাৎলা-পড়া ছেলেমি খেয়ালে যেন রূপকথা গড়া কালের লেখনি-টানা নানামতো ছবির ইঙ্গিতে, সবুজে পাটলে আঁকা কালো সাদা রেখার ভঙ্গিতে। সদ্য ঘুম থেকে জাগা প্রতি প্রাতে নূতন করিয়া ভালো-লাগা ফুরাত না কিছুতেই। কিসে যে ভরিত মন সে তো জানা নেই। কোকিল দোয়েল টিয়ে এ বাগানে ছিল না কিছুই, কেবল চড়ুই, আর ছিল কাক। তার ডাক সময় চলার বোধ মনে এনে দিত। দশটা বেলার রোদ সে ডাকের সঙ্গে মিশে নারিকেল-ডালে দোলা খেত উদাস হাওয়ার তালে তালে। কালো অঙ্গে চটুলতা, গ্রীবাভঙ্গি, চাতুরী সতর্ক আঁখিকোণে, পরস্পর ডাকাডাকি ক্ষণে ক্ষণে-- এ রিক্ত বাগানটিরে দিয়েছিল বিশেষ কী দাম। দেখিতাম, আবছায়া ভাবনায় ভালোবাসিতাম।
I BROUGHT out my earthen lamp from my house and cried, 'Come, children, I will light your path!' The night was still dark when I returned, leaving the road to its silence; crying, 'Light me, 0 Fire! for my earthen lamp lies broken in the dust!'
(Translated from the Bengali of Dwijendralal Roy) 'COME, MOON, come down, kiss my darling on the forehead,' cries the mother as she holds the baby girl in her lap while the moon smiles as it dreams. There come stealing in the dark the vague fragrance of the summer and the night-bird's songs from the shadow-laden solitude of the mango-grove. At a far-away village rises from a peasant's flute a fountain of plaintive notes, and the young mother, sitting on the terrace, baby in her lap, croons sweetly, 'Come, moon, come down, kiss my darling on the forehead.' Once she looks up at the light of the sky, and then at the light of the earth in her arms, and I wonder at the placid silence of the moon. The baby laughs and repeats her mother's call, 'Come, moon, come down.' The mother smiles, and smiles the moonlit night, and I, the poet, the husband of the baby's mother, watch this picture from behind, unseen.